দেশজুড়ে

চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে ১০ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি

প্রিন্ট করুন

হবিগঞ্জের সংবাদ,অনলাইন ডেস্ক।
নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখা এবং এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার আগে রাজধানী ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি। দুই মাসের বেশি ধরে এই সমাবেশ চলবে। ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিভাগ দিয়ে শুরু হবে এই সমাবেশ। সর্বশেষ সমাবেশ হবে ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায়।

গত সোমবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে দশ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। আজ বুধবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন বিভাগে কবে সমাবেশ তার খসড়া করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দুই মাস তিন দিনব্যাপী এই কর্মসূচি আগামী ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম দিয়ে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর, ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিনে দলের ঘোষিত ১৬টির মধ্যে ১৪টি সমাবেশ করেছে বিএনপি। মিরপুরের পল্লবীর সমাবেশ শুরুর আগে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় পন্ড হয় এবং লালবাগের সমাবেশ স্থগিত করা হয়। এর আগে ২২ আগস্ট থেকে থানা, উপজেলা, পৌর, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি করে বিএনপি। লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও অন্যান্য সকল মহানগর ২৯ ও ৩০ জুলাই এবং সকল জেলা পর্যায়ে ৩১ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশ করে করে বিএনপি।

এর আগে ২২ আগস্ট থেকে থানা, উপজেলা, পৌর, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি করে বিএনপি। লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও অন্যান্য সকল মহানগর ২৯ ও ৩০ জুলাই এবং সকল জেলা পর্যায়ে ৩১ জুলাই বিক্ষোভ সমাবেশ করে করে বিএনপি।

১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে। এসব কর্মসূচি করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে। ভোলায় পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা নুর আলম, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতা শাওন প্রধান ও মুন্সিগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন নিহত হয়েছে।

বিএনপি নেতাদের দাবি, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ হামলা করে, আবার তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। তাদের কেউ ঘটনাস্থলে ছিল না, আবার কেউ প্রবাসে থেকেও মামলার আসামি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগের বছরই রাজনীতি সংঘাতের দিকে এগুচ্ছে কিনা-এই আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।

বিএনপি নেতারা বলেন, রাজপথে একতরফা মার খাওয়ার পর বিএনপি এখন প্রতিরোধের কথা বলছেন। গত কয়েকদিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কর্মীরা লাঠির মাথায় পতাকা বেঁধে মিছিল সমাবেশ বা দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এমনই একটি মিছিল থেকে বিএনপির কর্মীরা গত সোমবার আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন ঢাকার হাজারীবাগ এলাকায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, দলের কর্মীদের কেউ কেউ আতœরক্ষার্থে এভাবে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। গত সোমবার হাজারীবাগে আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশের জন্য তিনবার জায়গা পরিবর্তন করেছে। সেখানেও আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করেছে। আমরা (বিএনপি) কোনভাবেই কোনো সংঘাত চাই না। সরকার সংঘাত করছে এবং বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতা বলেছেন, সারাদেশে তাদের দলের নেতাকর্মীরা এবার কিছুটা আতœবিশ্বাস ফিরে পেয়ে মাঠে নেমেছেন। ফলে নির্বাচনের আগের বছরই দলটির নেতৃত্ব রাজপথে প্রতিরোধ করার একটা শক্তি অর্জন করতে চাইছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মারমুখী আচরণ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বহিস্কৃতদের দলে ফেরানো হচ্ছে

এদিকে, ক্ষমতাসীন দলের আচরণকে আমলে নিয়ে গত সোমবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, দেশের চলমান আন্দোলনের স্বার্থে দলীয়শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এ পর্যন্ত দল থেকে বহিস্কৃতদের দলে ফিরিয়ে আনতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দপ্তরের মাধ্যমে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আবেদন করার পর অতীত অপরাধের ধরণ এবং তাদের বর্তমান কর্মকাণ্ড বিচার বিশ্লেষণ করে বহিস্কৃতদের দলে ফিরিয়ে আনার পক্ষে মতামত দিয়েছে স্থায়ী কমিটির নেতারা। সেক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ের বহিষ্কার আদেশ ঢালাওভাবেই প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে যারা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করে অথবা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন, তাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের ব্যাপারে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে শীর্ষ নেতৃত্বকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সূত্র কালবেলা।


Related Articles

Back to top button
Close