শিক্ষক সুপ্তা রানিকে ‘মৃত ভেবে’ সড়কে ফেলে দেওয়া হয়
![](https://habiganjersangbad.com/media/2022/08/FB_IMG_1660631136147.jpg)
হবিগঞ্জের সংবাদ, অনলাইন সংস্করণ।
শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় শিক্ষক সুপ্তা রানি দাশকে (৩০) সিএনজি অটোরিকশার চালক ও তার সহযোগীরা অপহরণ করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বাধা দেওয়ায় অটোরিকশার ভেতরেই তাকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। এরপর রাস্তায় ফেলে দিয়ে ‘দুর্ঘটনা’ বলে সাজানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান তিনি।
সোমবার (১৫ আগস্ট) সুপ্তা রানীর ছোট ভাই পুলক দাশ এ ঘটনায় বাদী হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
মামলায় চুনারুঘাট উপজেলার বদরগাজী গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে সিএনজিচালক মতিন মিয়াকে (৪৫) আসামি করা হয়। এ ছাড়া তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
সুপ্তা রানী দাশ শায়েস্তাগঞ্জ নিশাপট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার মামদপুর গ্রামের পবিত্র রঞ্জন দাশের মেয়ে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শায়েস্তাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার পর আসামি মতিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই সিএনজি অটোরিকশাটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
তবে মামলা করতে দেরি হওয়ায় আসামিরা পালানোর সুযোগ পেয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য শায়েস্তাগঞ্জ শহরের পোস্ট অফিস-সংলগ্ন সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে আসেন সুপ্তা রানি। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সিএনজি অটোরিকশাচালক মতিন মিয়া তার সহযোগীদের নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। সুপ্তা রানী সেখানে আসা মাত্রই মতিন মিয়া তাকে ডেকে সিএনজিতে তোলেন।
বিদ্যালয়ের কাছাকাছি গাড়িটি যাওয়ার পর সুপ্তা রানি তাকে নামিয়ে দিতে বলেন। কিন্তু সেখানে না নামিয়ে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে রঘুনন্দন পাহাড়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন চালক ও তার সহযোগীরা। এ সময় সুপ্তা ধস্তাধস্তি করলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে চালক ও তার সহযোগীরা মারাত্মক আঘাত করেন।
এক পর্যায়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে গেলে ‘মারা গেছেন’ মনে করে সুপ্তা রানিকে চালক ও তার সহযোগীরা রাস্তায় ফেলে দেয়। বিষয়টিকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল তারা।
পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মো. মাওলা বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন যেহেতু মামলা হয়েছে, পুলিশ সঠিক তদন্ত করে সত্য ঘটনা উন্মোচিত করবে বলে আশা করছি।