প্রতারণার গডফাদার বানিয়াচংয়ের ছোট মিয়া ওরফে শামীম চৌধুরী

হবিঞ্জের সংবাদ, অনলাইন ডেস্ক।
প্রতারণার গডফাদার বানিয়াচংয়ের ছোট মিয়া ওরফে শামীম চৌধুরী। ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি লাখ লাখ টাকা।
জেলা প্রশাসক ও বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে রয়েছে তার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ।কখনো সাংবাদিক,এনজিও কর্মী,হোটেল বয়,বিয়ের ঘটক, আবার কখনো তিনি সরকারি নিলামকৃত গাড়ী বিক্রির দালাল পরিচয় দিয়ে গাড়ী কিনে দেয়ার নাম করে সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। বানিয়াচং উপজেলার ৬নং ইউনিয়নের কাগাপাশা গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে ছোট মিয়া ওরফে শামীম (৪০) এর চাঁদাবাজি ও প্রতারণায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরও ফল পাচ্ছেননা ভুক্তভোগীরা।জনমনে প্রশ্ন কেন ওই প্রতারককে আইনের আওতায় আনা হচ্ছেনা।তার খুঁটির জোর কোথায়? সম্প্রতি কাগাপাশা ইউনিয়নের খেয়াঘাটের চাঁদাবাজির অভিযোগের পর ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে বেড়িয়ে এসেছে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির ভয়ংকর সব তথ্য। অনুসন্ধানে জানা যায়,নবীগঞ্জে লন্ডনী কন্যা বিয়ে দেয়ার নাম করে হেলাল মিয়া নামে একব্যাক্তির কাছ থেকে নিজেকে ঘটক পরিচয় দিয়ে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় শামীম।বিয়ে না হওয়ায় শামীমকে নবীগঞ্জ একটি হোটেলে আটক করে উত্তম মধ্যম দেন ওইখানকার জনতা।২০১৮ সালে নিলামে সরকারী গাড়ী কিনে দেয়ার কথা বলে নবীগঞ্জ উপজেলার ছোট সাকুয়া গ্রামের আকিক মিয়াকে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর সিল মোহরে ভূয়া কাগজ দিয়ে হাতিয়ে নেয় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা। চার বছর অতিবাহিত হলেও ওই ব্যাক্তিকে এখনও গাড়ী এনে দেয়া হয়নি। নবীগঞ্জের আউশকান্দি এলাকার জামাল মিয়াকে মোটর সাইকেল কিনে দেয়ার নামে করে দেড় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ইতিপূর্বে ডেসটেনির মাঠকর্মী পরিচয়ে কাগাপাশা গ্রামবাসীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ ও গ্রামবাসীকে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবী করে ব্লেকমেইল করে আসছিলো সে। বিষয়টি নিয়ে অতিষ্ট হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ওই চাঁদাবাজ ও প্রচারকের বিরুদ্ধে কাগাপাশা গাংপাড়ে মানববন্ধন করেন। আপন চাচাতো ভাই জিয়াউর চৌধুরীও ছাড় পায়নি তার চাঁদাবাজির আগ্রাসন থেকে। লাগাতার ১৮ দিন জিয়াউরের কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবীর পর নিরুপায় হয়ে জেলাপ্রশাসক বরাবরে ২০২১ সালের মার্চ মাসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী চাচাতো ভাই। সম্প্রতি ১৮ এপ্রিল চাচাতো ভাই জিয়াউরদের সাথে সে আবারো জমি দখল করতে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এসংঘর্ষে ৫ জন আহত হন। স্থানীয়রা জানান,ছোট মিয়া ছিলো একজন হোটেল বয়। জাফলংয়ের মুম্বাই হোটেলে সে বয়ের কাজ করতো।তারপর কাগাপাশার নুরজাহান হোটেলে।সে কিভাবে নিজের নাম পাল্টিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে এবং মানুষের সাথে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করছে,এনিয়ে জনমনে প্রশ্ন। অপরদিকে সম্প্রতি বানিয়াচং কাগাপাশা খেয়াঘাট নিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগকে দামাচাপা দিতে নিজের আপন ভাই সেলিম মিয়াকে দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে সাংবাদিক নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিয়েছে ওই ছোট মিয়া।এলাকাবাসী বলছেন,এটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা।নজরুল ইসলাম তালুকদার একজন সিনিয়র সংবাদকর্মী, তিনি একজন শান্তি প্রিয় লোক।অথচ তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের। বিষয়টি হাস্যকর ছাড়া কিছুইনা। এসময় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে শামীমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের নিকট দাবী জানান এলাকাবাসী।
চাঁদাবাজি ও প্রতারণার বিষয়ে বক্তব্য নিতে ছোট মিয়া ওরফে শামীমের মুঠোফোনে একাধিক কল দিলেও কল রিসিভ হয়নি। তাই বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।তবে প্রশাসন বলছে দ্রুত শামীমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে