দেশজুড়ে

বানিয়াচংয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত -প্রতিপক্ষের বাড়িঘর লুটপাট

প্রিন্ট করুন

হবিগঞ্জের সংবাদ অনলাইন ডেস্ক,
বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের দোয়াতপুর গ্রামে গত রবিবার ভাঙ্গারি ব্যবসার ৪৫ কেজি তামার তার চুরি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মোর্শেদ নামে এক কিশোর নিহত হয়। রবিবার রাতেই এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল লোক কাদির মিয়া ও তার আত্মীয়দের ৮টি বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তাদের প্রায় ৭০ লক্ষাধিক টাকার সম্পত্তি লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় বাড়ির নারীদের শ্লীলতাহানী করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন কাদির মিয়ার লোকজন।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দোয়াতপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কাদির মিয়া ও তার আত্মীয়দের ঘরবাড়ি জনমানবশুন্য হয়ে রয়েছে। বাড়িগুলোর ভেতরে শুধু হামলার চিহ্ন। কিছু কাপড়চোপড় ও জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। আলমারী, লকার, মিটসেফগুলো ভাঙা। ধান-চালের গোলা ও ড্রামগুলো শুন্য অবস্থায় উল্টানো। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগির খোয়ারগুলো শুন্য অবস্থায় রয়েছে।
ঘরবাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া কয়েকজন নারীর সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামে। তারা জানায়, সে রাতে তারা কিভাবে শিশু সন্তানদের নিয়ে ঘরবাড়িতে পালিয়ে এসেছেন। বর্তমানে তারা খুবই মানবেতর অবস্থায় রয়েছে।
দোয়াতপুর গ্রামের আব্দুল কাদিরের স্ত্রী জানান, তারা ঘর থেকে ১০টি গরু, ৭টা ছাগল, ২ ল্যাপটপ, মোবাইল, ফ্রিজ স্বর্ণাংকারসহ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার সম্পদ লুট করা হয়েছে। আব্দুল মালেকের স্ত্রী জানান, তাদের ১১টি গরু, ২৫টি ছাগল, ৪টা শ্যালো মেশিন, ১টি ট্রাক্টর, ৩ ভরি বিপুল পরিমাণ ধান-চাল লুট করে নিয়ে গেছে।
প্রায় প্রত্যেকের বাড়ি থেকে উল্লিখিত পরিমাণ সম্পদ লুট করা হয়েছে বলে জানান পালিয়ে আসা আরো কয়েকজন নারী। তাদের সকলের হিসেবমত ৬৫টি গরু, ৩৫-৪০টি ভেঁড়া ও ছাগল, স্বর্ণাংকার, সেচ মেশিনসহ প্রায় ৭০ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন ধরণের মালামাল লুণ্ঠিত হয়।
তারা বলছেণ, তাদের ধান পাকলেও তা কেটে ঘরে তুলতে পারছেন না। এর মধ্যে কয়েকজন পুরুষ মোর্শেদ হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। আর কয়েকজন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবিক আচরণ প্রত্যাশা করছেন।
এ ব্যপারে বানিয়াচং থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, তেমন লুটপাট হয়নি। ঘটনার পরপরই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, গরু বাচুর স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় থাকার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, কাদির মিয়ার দোকানে হাফিজুল মিয়া ৪৫ কেজি তামা চুরি করে বাড়ি নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে রবিবার মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ নেয়া হয়। সকালে মীমাংসা হওয়ার আগেই আবারও দু’পক্ষ উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এসময় কাদির মিয়ার পক্ষে সংঘর্ষে অংশ নেন মালেক মিয়া, বিলাল মিয়া, সুহেল মিয়া, জুয়েল মিয়া, রুমান মিয়া, দুলাল, আলাল সহ আরো কয়েকজন হাফিজুল মিয়ার পক্ষে তার নিকটাত্মীয় মোর্শেদ মিয়া সহ আরো বেশ কয়েকজন এগিয়ে আসেন। ওই সময় রোমান মিয়ার হাতে থাকা ফিকলের আঘাত মোর্শেদের পেটে লাগলে তিনি নিহত হন। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তার পিতা ছবুর মিয়া সহ আরও কয়েকজন আহত হন।


Related Articles

Back to top button
Close