দেশজুড়ে

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিরবে কাঁদে, সাথে ননএমপিও শিক্ষক-সাজ্জাদ বিন লাল

প্রিন্ট করুন

২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনার জন্য প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রতিষ্টান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা হচ্ছে পাবজি মুখর। একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা হচ্ছে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত অন্য দিকে ননএমপিও শিক্ষকদের নাজেহাল অবস্থা।

যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা চালু রেখেছেন তাতেও অজপড়া গাঁয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত রয়েছে, কেননা যাদের অভিভাবকদের নুন আনতে পানতা ফুরায় তাদের এত দামের মোবাইল ও এমবি কেনার স্বপ্ন তো আকাশের চাঁদ পাওয়ার মত।

ক্লাসে রোল যার ১ম কিংবা ২য় হতো সেই শিক্ষার্থীও বই গুছিয়ে রেখে মোবাইলে পাবজি খেলা নিয়ে ব্যস্থ। করোনা পরিস্থিতিতে বেড়ে চলেছে বাল্যবিবাহ। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে মেয়েটি কিংবা যে ছেলেটি ৩২ টি দাঁতের মালিক হয়নি সেই ছেলেমেয়েটি সংসারের মালিক হচ্ছে অনায়েশে।

একদিকে যেমন শিক্ষার্থীর এমন অবস্থা অন্যদিকে ননএমপিও শিক্ষকদের কথা তো ভাবা-ই যায় না। কেননা প্রতিষ্টান খোলা থাকলে জ্ঞানের ফেরিওয়ালাদের সামান্য বেতন মিলে, কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ থেকে বেতন বন্ধ রয়েছে হাজারো শিক্ষকদের।

যারা শিক্ষার শেকড় মজবুত করে দিবেন শিক্ষার্থীদের, যারা প্রতিষ্ঠিত করে দিবেন অনাকাঙ্ক্ষিত জাতির ভবিষ্যত, যারা প্রজ্জ্বলিত করবেন জ্ঞানের বাতিঘর তারাই আজ অবহেলিত করোনার ভাইরাসে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে।

নাম বলতে অনিচ্ছুক একজন ননএমপিও শিক্ষক বলেন, আমার পরিবারে সদস্য ৫ জন আর আমিই একমাত্র উপার্জনকারী। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চারপাশ যেন অন্ধকারে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রয়েছি যা কাউকে বুঝাতে পারবো না। পৈত্রিক কিছু জমি ছিল অভাব অনটনে তার একাংশ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। জানিনা আমার মত আর কত জন শিক্ষক এমন ভাবে দিন কাটাচ্ছেন।

এমন ভাবে যদি কাটে শিক্ষাগুরুর জীবন জানিনা তিনি কতটা উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে তরুণ প্রজন্মকে। ননএমপিও শিক্ষকদের আহাজারি যেন প্রতিটি মুহুর্তে, তাঁরা যেন প্রায় মরার মত বেঁচে আছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন এতিম ও অবুঝ শিশুর মত দাঁড়িয়ে আছে এবং নীরবে কাঁদছে। প্রতিষ্ঠানের মাঠগুলো দেখলে মনে হয় কোন পার্ক হয়েছে। যেখানে কোন প্রকার গাছ পালা থাকার কথা না সেখানে অনেকগুলো গাছ দাঁড়িয়ে আছে।

করোনা পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে মহান আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কেউ জানে না। কেউ জানেনা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে। যে সময় প্রতিষ্ঠান খুলবে তার আগে অনেক ননএমপিও শিক্ষকরা হয়তো জীবনের মায়া ত্যাগ করে পর-পারে চলে যাব অভাব অনটনে।

একদিকে যেমন শিক্ষার্থীরা পাবজি মুখী হয়ে শিক্ষা বিমুখ হচ্ছে অন্যদিকে প্রায় ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে মনে হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী বেচে নিয়েছে কঠোর থেকে কঠোর পরিশ্রমের কাজ, এমন কাজ আইনত নয় তবুও পরিস্থিতি তা করতে বাধ্য করেছে।

কেউবা আবার অল্প বয়সেই কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের বোঝা যা থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিকক হলে পূনরায় শিক্ষামুখী হবে কি না সেটা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন।


Related Articles

Back to top button
Close