Unauthorisedদেশজুড়ে

ডাকঘর এখন চিঠি শূন্য

প্রিন্ট করুন

সাজ্জাদ বিন লাল

‘চিঠি দিও প্রতিদিন, চিঠি দিও’। গানটি গ্রাম বাংলার সবার কাছে পরিচিত হলে ও হারিয়ে গেছে চিঠি! হারিয়ে গেছে প্রিয়জনকে লেখা কাগজে লেখার সেই যুগ।

অতি প্রাচীন কাল থেকেই যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে চিঠিপত্র ছিল মানুষের অন্যতম হাতিয়ার। যখন ডাকঘর ছিল না তখন মানুষ পোষা পাখি বা প্রাণী অর্থাৎ কবুতরের মাধ্যমে চিঠিপত্র আদান প্রদান করতো।

কিন্তু এখন সারা দেশে অসংখ্য পোস্ট অফিস থাকা সত্তে ও ডাক বিভাগেরও এখন সেই ব্যস্ততা নেই। সাইকেলের বেল বাজিয়ে ডাক পিয়নের ‘চিঠি এসেছে…চিঠি… এমন কথাও আর শোনা যায় না। এখন আর সেই আগেকার দিনের মতো পিয়নের পানে চেয়ে থাকতে হয় না প্রিয়জনদের।

কারণ চিঠি পত্র নাই বললে ও চলে। চিঠি ছিল এক কালের সাহিত্য কিন্তু সেই সাহিত্য আজ নেই। চিঠির প্রচলন হারিয়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীরা জানেনা যে চিঠি আসলে কি। জানেনা চিঠির অংশ কয়টি।

চিঠির মাধ্যমেই সবাই যোগাযোগ করত কিন্তু প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় এখন আর চিঠির প্রচলন নেই বললেই চলে ‘চিঠি লিখলাম ও লিখলাম তোমাকে পরে জবাব দিয়ো গো আমাকে’ । বাংলা সিনেমার এ গানের মতো কোনো প্রেমিকও প্রেমিকার চিঠির অপেক্ষায় থাকে না।

অথচ এক সময় ডাকপিয়নের চিঠিই ছিল যোগাযোগের একমাত্র উপায়। প্রযুক্তির ছোঁয়া আজ শহর ছেড়ে অজপাড়া গাঁয়েও পৌঁছে গেছে।

তাই এসএমএস, মেইল আর ফেসবুকে চ্যাটই প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। পরিবারের কেউ দেশের বাইরে কিংবা অন্য কোথাও অবস্থান করলে তার খোঁজ নেওয়া হতো চিঠির মাধ্যমে ।

তাকে বাড়ির খোঁজ দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিল এই চিঠি লিখন পদ্ধতি। তখন মোবাইলের মতো দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম ছিল না বলে সবার কাছে জনপ্রিয় মাধ্যম ছিল চিঠি।

তাছাড়া প্রেমিক-প্রেমিকা, ভাই-বোন ও বোনকে-ভাই, মা-ছেলেকে, বাবা-ছেলেকে, ছেলে-বাবা মাকে নিজের অবস্থান জানাতে চিঠি লিখতেন।

এখন বিদেশে যোগাযোগ করলে স্কাইপি কিংবা ফেসবুক ভিডিও চ্যাটের মাধ্যমে সরাসরি দেখা হচ্ছে। তবে অনেকেই প্রিয় মানুষের কথা ভেবে এখনও চিঠি লিখেন মনের প্রশান্তির জন্য।

তবে এ চিঠি ডাকবাক্সে জমা দেওয়া হয় না। আমি ও প্রতিদিন চিঠি লিখি অজানা অচেনা কোন রুপসী কে মনে করে, কিন্তু তা কোনদিন ডাকবাক্সে জমা দেই না।

এজন্য আমার ও শিল্পীর গানের মত গাইতে ইচ্ছে করে “রোজ রাত্রে চিঠি লেখি ভোর বেলা তা ছিড়ে ফেলি এ চিঠি ডাকবাক্সে হয় না রে জমা।


Related Articles

Back to top button
Close