মঙ্গলবার , ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নবীগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন নিয়ে দুই গ্রুপে গ্রুপিং চরমে

প্রকাশিত হয়েছে -

হবিগঞ্জের সংবাদ, অনলাইন ডেস্ক।

নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে সামনে রেখে বিএনপির দুটি বলয়ের গ্রæপিং ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দিনতো-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্ব›দ্ব। একাধিক সভা করেও সমাধান করা যাচ্ছেনা গ্রæপিং। আলাদা আলাদাভাবে পৃথক-পৃথক স্থানে পালন করা হচ্ছে বিএনপির আন্দোলন-কর্মসূচি। গ্রæপিং প্রকাশে রূপ নেয়ায় চরমভাবে ক্ষুব্দ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এদিকে, একাধিক বার উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা করা হলেও কোন্দলের কারণে বার বার পরিবর্তন করা হয় সম্মেলনের তারিখ। এবারও সম্মেলন নিয়ে নানা শঙ্কায় আছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ৯ নভেম্বর নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও নির্ধারিত হয়নি সম্মেলনের স্থান। ফলে আদৌ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কী না এনিয়ে সংশয় রয়েছে তৃণমূলে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়- ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির তৎক্ষালিন সভাপতি শেখ সুজাত মিয়ার সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয় তৎক্ষালিন সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সেফুর।
এরপর থেকে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির একটি গ্রæপের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া। অপর গ্রæপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক সরফরাজ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান সেফু।
আগামী ৯ নভেম্বর নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মুদ্দত আলীর কাছে সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচনের জন্য দুটি বলয়ের ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
সভাপতি পদে- সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শেখ সুজাত মিয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মতিউর রহমান পেয়ারা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোক্তাদির চৌধুরী। সিনিয়র সহ সভাপতি পদে- সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশিক মিয়া ও বিএনপি নেতা মুশফিকুজ্জামান চৌধুরী নোমান। সাধারণ সম্পাদক পদে- নির্বাচন করছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সেফু ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আহমদ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে- প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমদ চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মজিদুর রহমান মজিদ, গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শফিউল আলম বজলু, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে- যুবদল নেতা নুরুল গনি চৌধুরী সোহেল, সোহেল আহমদ চৌধুরী রিপন, শাহিদ আলী তালুকদার ও অলিউর রহমান অলি মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
প্রতিটি পদে- দুটি বলয়ের পাল্টাপাল্টি প্রার্থী ঘোষণায় বিএনপির কোন্দল এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। গ্রæপিং ও বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তবে নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে একাধিকবার রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় এসব বৈঠক।
সম্মেলন নিয়ে সভাপতি প্রার্থী সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া বলেন- ‘সম্মেলনের স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি, যথা সময়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কী-না তা নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ভালো বলতে পারবেন।’
অপর সভাপতি প্রার্থী মতিউর রহমান পেয়ারা বলেন- ‘সম্মেলনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। ইতিপূর্বে ভোটার তালিকা নাম না ওঠা, আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগসহ বিভিন্ন অজুহাতে সম্মেলনের তারিখ একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ে এইবার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের স্থানের বিষয়ে উপজেলা ও জেলা কমিটি বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’
এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট মুদ্দত আলী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জেলা নেতৃবৃন্দ বসে আলোচনার ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলনে আয়োজন করা হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে দলের প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। নির্ধারিত তারিখে গোপন ভোটের মাধ্যমে সম্মেলন সম্পন্ন করার চেষ্টা করবো।’