শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

কাজে ফিরেনি হবিগঞ্জের ২৩ চা-বাগানের শ্রমিকরা

প্রকাশিত হয়েছে -


হবিগঞ্জের সংবাদ, অনলাইন ডেস্ক।
মজুরি বৃদ্ধির দাবি আদায়ে অনড় রয়েছে হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা। সোমবার সকালেও বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা চুনারুঘাটের চান্দপুর বাগানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি ছাড়া কাজে ফিরবেন না বলে জানান। একই সাথে ১২০ টাকা মজুরিতে কাজে যোগ দেয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন। তাদের বিরুদ্ধে দেয়া হয় ¯েøাগানও।

ভ্যালির শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলছেন, কাজে ফেরার জন্য

তারা এখনও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা পাননি। এ ছাড়া ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের চা শ্রমিকরা কাজে ফিরলেও তারা ফিরবেন না। রাতের আঁধারে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ১২০ টাকা মজুরিতে যে স্বাক্ষর করেছেন, সেটি তারা মানেন না বলেও জানান। চান্দপুর চা বাগানের শ্রমিক বীরেন তন্তুবায় বলেন, আমরা আজকে ১৪ দিন ধরে কর্মবিরতি করছি ৩০০ টাকা মজুরির জন্য। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন ১৪৫ টাকায় কাজে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

চান্দপুর চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সাধন সাওতাল বলেন, আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি কাজে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়নি। তারা যদি প্যাডের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে কাজে যাওয়ার নির্দশনা দেয় তাহলে আমরা কাজে যাব, তবে অবশ্যই ৩০০ টাকা মজুরি নিয়ে। এর কমে হলে আমরা কাজে যাব না।

বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেন, আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা রাতের আঁধারে গিয়ে হাত মিলিয়েছে। তাতেও লাভ হবে না। ৩০০ টাকা মজুরি ছাড়া কোনো শ্রমিক কাজে ফিরবে না। তিনি বলেন, নেতারা রাতে চোরের মতো স্বাক্ষর করে এসেছে। আমরা এসব নেতাকে ধিক্কার জানাই। তাদের পেলে আমরা গণপিটুনি দেব।

এর আগে রোববার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে দুই দিনের আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। আলটিমেটাম অনুযায়ী সোম ও মঙ্গলবার শ্রমিকরা কোনো ধরনের আন্দোলন-সংগ্রাম না করে নিজ নিজ বাগানে অবস্থান করবেন। ২৩ আগস্টের ভেতর দাবি আদায় না হলে ২৪ তারিখ আবারও তারা রাস্তায় নামবেন বলে জানান।

তবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফিরছেন মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকরা। সোমবার থেকেই তাদের কাজে যোগ দিয়েছে বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে রোববার রাতে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, আপাতত আমরা পূর্বের মজুরিতেই কাজে যোগ দেব, তবে দ্রæততম সময়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করে নতুন মজুরি নির্ধারণ করবেন। আর ধর্মঘট চলাকালীন ১০ দিনের মজুরিসহ সব সুবিধাদি মালিকপক্ষ প্রদান করবে।

এদিকে, সোমবার দুপুরে চান্দপুর চা-বাগানে যান হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। সেখানে গিয়ে তিনি শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য অনুরোধ করলেও তা মানেনি শ্রমিকরা।