শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

নবীগঞ্জে চেয়ারম্যান এড.গতি গোবিন্দর জরুরী সাংবাদিক সম্মেলন

প্রকাশিত হয়েছে -

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশের বিরুদ্ধে গত ২৮ জুলাই দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকায় “নবীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গতি গোবিন্দের বিরুদ্ধে মন্দিরের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে ৩০ জুলাই শনিবার বিকেলে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যে বা যাহারা তার বিরুদ্ধে জেলা পরিষদে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে তা জেলা পরিষদের প্রশাসক ডাঃ মুশফিক হোসেন চৌধুরী ও জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিনে মন্দিরস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পাননি। তিনি দাবি করেন, যাচাই বাচাই না করে দৈনিক আমার হবিগঞ্জ পত্রিকা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অবমাননাকর খবর প্রকাশ করে তার মান সম্মান ক্ষুন্ন এবং সমাজের নিকট তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। তিনি উক্ত সংবাদের তীব নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, তার গ্রামের যে ১১ জন লোক তার বিরুদ্ধে জেলা পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে তার মধ্যে দরখাস্তকারী লোকেশ দাশ লোকন দুর্গাপুরের আখড়ার জমি বর্গা নিয়ে ধান পরিশোধ না করায় রাজেস দাশ বাদি হয়ে সিআর ৫৫/২০০৬ইং মামলা দায়ের করে আখড়ার ধান আদায় করা হয়। দুর্গাপুর গ্রামের অজিত দাশ বাদি হয়ে লোকেশ দাশ লোকনের বিরুদ্ধে জি আর ১৩/২০২০নং মামলা দায়ের করলে উক্ত মামলায় লোকেশ দাশ দীর্ঘদিন জেল হাজত বাস করে। উক্ত মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ।
দরখাস্তকারী রিন্টু চন্দ্র দাশের পিতা রনধীর দাশ দুর্গাপুরের আখড়ার বিল বিক্রয়ের টাকা আত্মসাতের দায়ে জ্যের্তিময় দাশ বাদি হয়ে সিআর ১৩৫/২০০৬ইং নং মামলায় বিজ্ঞ আদালত রনধীর দাশের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। নিলকন্ট দাশ বাদি হয়ে রনধীর দাশের বিরুদ্ধে সরকারী টাকা আত্মসাতের জন্য দন্ডবিধির ৪০৯ ধারায় জি আর ১২৭/৭ মামলা দায়ের হয়। এই দুই মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ। এছাড়া উক্ত রনধীর দাশ ৪০ বছর পূর্বে দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে ৭ বিগা জমি বিক্রয় করে দখল সমজাইয়া দিলেও অদ্যবধি রেজিষ্ট্রি করে দেননি। এছাড়া সরকারি গোপাটের উপর রনধীর দাশ অবৈধভাবে বাড়ি নির্মান করে সেখানে বসবাস করে আসছেন।
দরখাস্তকারী মৃত্যুঞ্জয় দাশের পিতা ধনঞ্জয় দাশের বিরুদ্ধে দুর্গাপুর গ্রামের উষা রানী দাশ বাদি হয়ে নারী নির্যাতন মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার আইনজীবিও এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ। অপর দরখাস্তকারী বিদ্যাচরণ দাশ মধুসূধন আখড়ার গাভী বর্গা নিয়ে গাভী বিক্রি করে ফেললে এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ পঞ্চায়েতের মাধ্যমে উক্ত গাভী বিক্রির টাকা আদায় করে আখড়াকে সমজিয়ে দেই। এছাড়া উক্ত বিদ্যাচরণ দাশের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য বিক্রির অপরাধে দায়েরা ১৫৫/১৩ইং নং মামলা চলমান রয়েছে। দরখাস্তকারী সুবীর দাশ সাবেক মেম্বার লিটন দাশের কাকাতো ভাই। উক্ত লিটন দাশের বাবা ও কাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে ৫ বিগা জমি বিক্রি করে দখল সমজিয়ে দিলেও তারাও রেজিষ্ট্রি করে দেয়নি অধ্যাবধি। সাবেক মেম্বার লিটন দাশের বিরুদ্ধে বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। উক্ত লিটন দাশের বিরুদ্ধে জি আর ১১৯/১২ইং মামলার ১ নম্বর আসামি। এছাড়া আরেক দরখাস্তকারী কানাই দাশের বিরুদ্ধেও বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন জীতেন্দ্র দাশ। ওই মামলারও বাদি পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ।
অনুষ্টিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ্যাডভোকেট গতি গোবিন্দ দাশ জানান, মূলত গ্রামের আখড়ার জায়গা জমি উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলার বাদি পক্ষের আইজীবি হওয়ার কারণে গ্রাম্য চক্রন্তকারী ও রাজনৈতিক কারণে তার বিরুদ্ধে এহেন মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, নবীগঞ্জবাসীর সহযোগিতা ও ভালবাসায় সর্ম্পূণ ঘুষ, দুর্নিতিমুক্ত, সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে উপজেলা বাসীর সেবা করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আপনারা আমার কর্মকান্ডের বিচার করবেন। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বিষয়টি অনুসন্ধানেররও দাবি জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু, উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি দুলাল চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দুর্গাপুর গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী অনন্ত কুমার দাশ, উপজেলা যুবলীগ নেতা পিকলু চৌধুরী, দুর্গাপুর গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী পান্নালাল চৌধুরী, করগাঁও ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কালন দাশ, দুর্গাপুর গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী জগন্নাথ দাশ, সুধাংশু রঞ্জন দাশ, নীতেষ দাশ, সবুজ গুপ-১, সবুজ গুপ-২, মিন্টু দাশ, সুজিত দাশ, অন্টু দাশ, রমাকান্ত দাশ, নিন্টু দাশ, নিকলেষ দাশ, জগদিশ দাশ, অজিত দাশ প্রমূখ।