শুক্রবার , ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বানিয়াচংয়ে প্রভাবশালীর ছদ্মনামে আখড়ার জল ব্যবহারের খাল বন্দোবস্তের অভিযোগ

প্রকাশিত হয়েছে -

সাজ্জাদ বিন লাল, বানিয়াচং থেকে। বানিয়াচংয়ের কাগাপাশা ইউনিয়নের সেকান্দরপুরে প্রতারণার মাধ্যমে সুবোধ দাস নামে এক প্রভাবশালীর ছদ্মনামে নিতাই গৌর আখড়ার জল ব্যবহারের খাল বন্দোবস্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বন্দোবস্ত বাতিল ও প্রতিকার চেয়ে গত ৮ নভেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর বরাবরে এলাকাবাসী ও আখড়ার পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন একই এলাকার অক্ষুর দাস।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,সেকান্দরপুর গ্রামের আখড়ার উত্তরে কুশিয়ারা নদীর শাখা খাল এবং দক্ষিণ পূর্বদিকে ডোবা রয়েছে। দীর্ঘ শত বছর ধরে ওই এলাকার স্থানীয় কৃষকরা হাওর থেকে ফসল উত্তোলনে নৌপথ হিসেবে ব্যবহার করছেন ওই খালটি এবং আখড়ার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জল ব্যবহার করে আসছেন।

অথচ ওই এলাকার মৃত রসময় দাসের পুত্র প্রভাবশালী ছদ্মনামধারী ভূমিখেকো সুবোধ দাস প্রতারণার মাধ্যমে সরকারকে ভূল বুঝিয়ে নিজের অপর একটি ছদ্মনাম (আকল দাস) ব্যবহার করে সেকান্দরপুর মৌজার ১৪৬০ এবং ১৪৬৯ সরকারী দুই দাগে মোট ৭৫ শতক খাল বন্দোবস্ত নেয়।পরে ভূমিখেকো সুবোধ দাসের আত্মীয় স্বজনরা ওই খাল এবং ডোবা দখল নিতে যায়।তখন স্থানীয় এলাকাবাসী এবং আখড়ার লোকজন তাদের বাঁধা দিয়ে ওই খাল ও ডোবা দখল নিতে দেয়নি।যেকোন সময় ওই জল ব্যবহারের খাল নিয়ে ভূমিখেকোদের সাথে গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলেও জানান স্থানীয়রা।

সেকান্দরপুর গ্রামের রবীন্দ্র দাস এবং নিরাপদ দাস জানান,সুবোধ দাসের ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষি জমি,বিল্ডিং বাড়ী সহ প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। তিনি প্রকৃতপক্ষে ভূমিহীন নন।তিনি সরকারকে ভূল বুঝিয়ে খালের শ্রেনী পরিবর্তন করে জনসাধারণের জল ব্যবহারের খালটি বন্দোবস্ত নিয়েছেন।ইতিপূর্বেও তিনি আরো বেশ কিছু জায়গা বন্দোবস্ত নিয়ে একই ইউনিয়নের হলিমপুর গ্রামের জৈনক শফিক মিয়ার কাছে বিক্রি করেছেন বলেও জানান তারা।

অভিযোগকারী অক্ষুর দাস বলেন,সুবোধ দাস ছদ্মনাম (আকল দাস)ব্যবহার করে ইতিপূর্বে আখড়ার উৎসব মাঠ বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন।পরে এলাকাবাসীর পক্ষে বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে অভিযোগ দায়েরের পর তাহার বন্দোবস্ত বাতিল হয়।সম্প্রতি আবারো ভূমিলোভী সুবোধ দাস সরকারকে ভূল বুঝিয়ে তাহার ছদ্মনাম ব্যবহার করে আমাদের জল ব্যবহারের খালটি বন্দোবস্ত নিয়েছে।এরই ধারাবাহিকতায় বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও আখড়ার পক্ষে ভূমি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অপরদিকে অভিযোগ দায়েরের পরপরই ভূমিখেকোরা বাদীপক্ষকে অভিযোগ তুলে নিতে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।নিরুপায় হয়ে গত ৯ নভেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (২) আদালত,
হবিগঞ্জকে অবহিত করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত সুবোধ দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে শারীরিক অসুস্থতার কারনে তিনি বক্তব্য দিতে পারেননি।

এব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ইফফাত আরা জামান উর্মি জানান,অভিযোগ পেয়েছি,পরবর্তী পদক্ষেপ শুনানির পর নেয়া হবে।