মাধবপুরে ডলি কনস্ট্রাকশনের গাফিলতিতে ৮ কোটি টাকার বরাদ্ধ বাতিল-নতুন বরাদ্ধের প্রস্তাব
শাহজিবাজার দরগা ফটক থেকে ছাতিয়ান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরে গেছে।

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরের শাহজিবাজার দরগা ফটক থেকে ছাতিয়ান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরে গেছে। অথচ ২০১৯ সালে সড়কটি সংস্কারের জন্য ৮ কোটি টাকার বরাদ্দ হয়েছিল।কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে আড়াই বছরেও সংস্কার হয়নি সড়কটির।এতে এলাকাবাসী ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ বলছে, ঠিকাদার কাজ না করায় পুরোনো বরাদ্দটি বাতিল করা হয়েছে। নতুন বরাদ্দ চেয়ে আবারও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আবারও দরপত্র আহ্বান করা হবে। সংস্কার করা হবে রাস্তাটি।
শাহজিবাজার দরগা ফটক থেকে বাঘাসুরা হয়ে ছাতিয়ান পর্যন্ত সড়কটি ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ। প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এক সময় ছোট ছোট সংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়। এখন বড় বড় গর্ত হয়েছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিকল্প সড়ক না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহনও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সড়ক দিয়ে হাসপাতালে গেলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কষ্ট অবর্ণনীয়। বৃষ্টির দিনে এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচলে ঘটছে দুর্ঘটনা।
সড়কের এই হাল দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা চিকিৎসক কামরুজ্জামান তালুকদার সজল। তিনি বলেন, ‘উপজেলার কত রাস্তা ঠিক হয়, কিন্তু আমাদের এই রাস্তা ঠিক হচ্ছে না। রাস্তার অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে কী কষ্ট যে হয়, সেটা কেবল আমরাই বুঝি।’স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি হলে ভাঙা অংশে পানি জমে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রায় সময় টমটম ও ইজিবাইকসহ হাল্কা যানবাহন উল্টে যায়। কখন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে সেই আতঙ্ক নিয়ে এই রাস্তায় আমাদের চলাচল করতে হয়।’
মোতালিব মিয়া বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। সকালে শত শত শ্রমিক কোম্পানির কাজে যায়। আমি বুঝি না, আমরা কী মানুষ না! আমরা কী এই দেশের জনগণ না! যদি জনগণ হই তাহলে আমাদের রাস্তা কেন ঠিক হবে না? কেন আমাদের এত দুর্গতির শিকার হতে হয়!’
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যায়লের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, ‘শাহজিবাজার-বাঘাসুরা ও ছাতিয়ান সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০১৯ সালের প্রথম দিকে ৮ কোটি টাকার বরাদ্দ হয়। কাজের টেন্ডার পায় ডলি কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা কিছুদিন কাজ করার পরই হঠাৎ কাজ বন্ধ করে দেয়।
বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও ঠিকাদার কাজ শুরু করেনি। একপর্যায়ে গত এপ্রিল মাসে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমরা কাজটি বাতিল করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কাজের দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি।
আবার সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আবারও দরপত্র আহ্বান করা হবে। তবে রাস্তার অবস্থা আগের চেয়ে বেশি নাজুক। তাই আগের চেয়ে বরাদ্দ বেশি চাওয়া হয়েছে।