শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

নবীগঞ্জের নোয়াগাও গ্রামে ৬ মৌজার লোকদের তান্ডব !৭০ লাখ টাকার ক্ষতি এলাকায় উত্তেজনা

প্রকাশিত হয়েছে -


নবীগঞ্জ ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি।
পুর্ব আক্রোশের জেরধরে নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চল সাতাইহাল ৬ মৌজার লোকজন কর্তৃক নোয়াগাওঁ গ্রামে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার দুপুরে এ ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া হামলাকারীরা নোয়াগাওঁ গ্রামের ১৫/১৬ টি গরু, ছাগল, অসংখ্য হাসঁ-মোরগ, প্রায় ৩ হাজার মন ধান লুটপাটসহ অনুমান ৭০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ১৩ নং পানিউন্দা ইউনিয়নবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, সম্প্রতি উপজেলার পানিউন্দা ইউপির নোয়াগাওঁ হাওরে গজনাইপুর ইউপির সাতাইহাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন (বীর প্রতীক) এর মালিকানাধীন ফিশারিতে অবস্থানরত পাহারাদার ও তার স্ত্রীকে বেদরক আঘাত করে নোয়াগাওঁ গ্রামের কতিপয় লোকজন। আহত দম্পতি সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ ঘটনায় মামলাও করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামসহ ৬ মৌজার লোকজন মিটিং করে মাইকিং করে কথিত প্রভাবশালীদের নির্দেশে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দুরত্ব আরেকটি ইউপিতে দেশীয় অস্ত্র সহকারে নিভৃত পল্লীর
নোয়াগাও গ্রামে হামলা করার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহি উদ্দিন ও নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ ডালিম আহমদসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষের লোকজনদের নিয়ে নোয়াগাও গ্রাম থেকে একটু দুরবর্তী স্থানে মিটিং করেন। এই সুযোগে সাতাইহাল ৬ মৌজার লোকজন হাকডাক দিয়ে বিকল্প রাস্তায় নোয়াগাওঁ গ্রামে ঢুকে হামলা, পাক হানাদার বাহিনীর ন্যায় ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হামলা
ভাংচুরসহ তান্ডবলীলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ করে ১৫/১৬টি গরু, ১০/১৫টি ছাগল, অসংখ্য হাসঁ মোরগ এবং বিভিন্ন বাড়ি থেকে কমপক্ষে ৩ হাজার মন ধান লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া অগ্নি সংযোগের ফলে ১৩টি পাকা-আধা পাকা, টিনসেটের বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ধান-চালসহ ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এতে ক্ষতির পরিমান হবে প্রায় ৬০/৭০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ৬ মৌজার তান্ডবে নোয়াগাওঁ যেন মৃত্যুপুড়িতে পরিনত হয়েছে। মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে হাহাকার ও কান্নার রুল। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন, সাতাইহাল ৬ মৌজার মানুষ এত দুর থেকে এসে নোয়াগাওঁ গ্রামে ঢুকে যে তান্ডব করেছে তা দুঃখ জনক। তাদের তান্ডবের সময় ধান, গরু, ছাগল, হাসঁ মোরগ এমনকি মোরগের ডিম পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে যায়। ১৩টি ঘর সম্পুর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে,এতে সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। এতে ক্ষতির পরিমান হবে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহি উদ্দীন আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, সকাল থেকেই ঘটনার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে ছিল,কিন্তু হামলাকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনের সাথে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে এধরনের হামলা করে ঘটনাটি ঘটিয়েছে৷ তবে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং সরকারী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে,
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন সাতাইহাল ৬ মৌজার জনসাধারণকে উস্কানী দিয়ে জনৈক প্রভাবশালীরা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে৷এনিয়ে
নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ ডালিম আহমদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্তিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি৷ এদিকে
এ নিন্দনীয় ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলার সর্ব মহলে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় বইছে৷ দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল৷