বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

তোমাকে নীরা বলে ডাকতে ইচ্ছে করছে: সাজ্জাদ বিন লাল-পর্ব- ০২

প্রকাশিত হয়েছে -

আমার প্রেমে পড়বে না?
নাহ!! আমি তো তোমার প্রেমে পড়ে গেছি নীরা, যতবার তোমার কথা ভাবি, তোমার সঙ্গে মনে মনে প্রেম করি। তোমার কথা ভাবতে ভাবতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে তোমার মায়াবী মুখ। এর নাম তো প্রেম নীরা। নীরা তোমাকে কাছ থেকে ছুঁতে চাই।

যদি দেখা না দেই?
কেনো?
আমার মন মেঘের মতো কবি। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। ভেসে যেতে ইচ্ছে করে। অনেক দূরে যেতে ইচ্ছে করে।
আমাকে নিয়ে যেও। তুমি মেঘ হয়ে ভেসে ভেসে কোথাও গেলে আমিও যাবো। তোমার সাথে ভেসে বেড়াবো। তোমার কাছা কাছি গিয়ে ছোঁব।
অসভ্য। সত্যিই তুমি অসভ্য কবি।

মোটেই না। রোমান্টিক কবি বলতে পারো না।
অসভ্য অসভ্য অসভ্য। সব সময়ই পাগলামি।

আর কিছু পারি না নীরা। শুধু পারি ভালেোবাসতে। তোমাকে ভালোবাসি। এবারো না করবে? ভালোবাসতে দিবে না?
না চাই না ভালোবাসা। চাই না স্পর্শ। আমি হারিয়ে যেতে চাই। অনেক দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে চাই। আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না কবি।

আমার ওপর অভিমান করে? কি এমন অভিমান তোমার?
অভিমান? অভিমান আছে সত্যি। কিন্তু তোমার ওপর অভিমান নেই কবি। অভিমান আছে, কিন্তু আজ বলবো না কার ওপর।

তুমি দেখা না দিলে আমার কষ্ট আরো বাড়বে। আর দূরে থেকো না নীরা। এবার দেখা দাও। ক’দিন পর বসন্ত। বসন্তে দেখা দাও। বসন্তে দেখা হোক আমাদের। তারপর বসন্ত দিয়ে ছোব।
ছুঁতে পারবে না। বসন্ত আসার আগেই আমি হারিয়ে যাবো।
না না না, ওভাবে বলো না। নীরা তুমি আমার কবিতা। তুমি আমার কবিতা লেখার প্রেরণা। তুমি না থাকলে কবিতা লেখবো কেমন করে?

তাই বুঝি!
যাও তাহলে হারিয়ে গেলে যোগাযোগ রাখবো। দূর থেকে তোমার কবিতা পড়বো। দেখা দাও নীরা।
না কবি না। আচ্ছা কবি এখনন রাখবো। কাজ আছে। পরে কথা বলবো কেমন?

নীরা ফোন রেখে দিলো। আমি মন কারাপ করে সাগর পাড়ে হাঁটতে থাকি। সাগরের ঢেউ আমাকে টানছে না আজ। সাগরের অপূর্ব দৃশ্য আমাকে টানছে না। সাগর পাড়ে বসে ঢেউয়ের খেলা দেখতে ইচ্ছে করছে না। আমার মন পড়ে আছে অন্যখানে, আমার মন পড়ে আছে নীরার কাছে।

নীরা কবে দেখা দিবে? তোমাকে দেখতে চাই। খুব কাছে থেকে তোমাকে দেখতে চাই নীরা। তোমার চোখে চোখ রেখে সাগরের ঢেউ দেখতে চাই। তোমাকে ছুঁতে চাই। আবার বসন্ত আসবে ক’দিন পরে। বসন্তে তোমাকে ছুঁতে চাই।

পরের দিন সাগর পাড়ে হাঁটছি আমি একা একা। মন পড়ে আছে নীরার কাছে। সাগর পাড়ে আজ উৎসবের আমেজ। কিন্তু আমাকে টানছে না। যদিও সাগর আমার কাছে সব সময়ই প্রিয়। সাগরই টানে সবচে বেশি।

কিন্তু নীরাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না। সমস্ত ভাবনায় নীরা। কবিতা লেখাও হচ্ছে না। ভালো করে সাগর দেখাও হচ্ছে না। নীরা তুমি কি সত্যি মেঘের সাথে ভেসে ভেসে দূরে কোথাও হারিয়ে যাবে? না না, তা কেনো ভাবছি। নীরার কথা ভাবতে ভাবতে লক্ষ্য করলাম লাল শাড়ি পরা একটি সুন্দরী মেয়ে সাগরে পা ভেজাচ্ছে।

আহা! নীরা কবে এখানে এসে সাগরের জলে পা ভেজাবে? আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো। তোমার পা থেকে নুপুর খুলে দেবো। ভাবতে ভাবতে নীরার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করলো।

সাথে সাথে মুঠোফোন বের করে নিই। নীলা, এই যে নীলা।
আজ নীরা নামে ডাকলে না?
না।
না কেনো?
আজ নীলা বলেই ডাকতে চাই।
ডাকো।
তুমি আমার নীল আকাশ হবে নীলা? আমি আকাশ দেখবো। ঘুড়ি হয়ে আকাশের ঠিকানায় ঘুরে বেড়াবো। কিংবা পাখি হবো। পাখি হয়ে আকাশের নীল রং স্পর্শ করবো। নীলা আজকের আকাশটা ভারী নীল হয়ে আছে।

না কবি আমি নীল আকাশ হবো না। ইচ্ছে করে না আমার। মন ভালো নেই কবি। মনটা খারাপ।
কি হয়েছে?
বলবো না, আরেক দিন বলবো।
আচ্ছা নীলা তুমি ঢেউ হবে? সাগরের নীল ঢেউ? অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল নীল ঢেউ স্পর্শ করার। তুমি নীল ঢেউ হলে আমার কি যে ভালো লাগবে।

না হবো নাহ। ইচ্ছে করে না।
না করো না নীলা। তুমি ঢেউ হলে সেই ঢেউয়ে আমি ভিজবো। হবে কি?
না কবি না। আমি ঢেউ হবো না।
অভিমান করে বলেছো? কেনো অভিমান করো? কিসের এত অভিমান আমার ওপর? কি করেছি ামি নীলা?

অভিমান করিনি কবি। ঢেউ হতে চাই না তো। অভিমান আছে তবে তোমার ওপর নয়।
কার ওপর অভিমান তাহলে?
আজ বলবো না।
আচ্ছা।
এইবার বলো নীলা কি হবে তুমি?
আমি মেঘ হতে চাই। মেঘ হয়ে অনেক দূরে হারিয়ে যেতে চাই, আমাকে কেই খুঁজে পাবে না। মেঘের দেশে বাড়ি বানাতে চাই।

না নীলা না, তা করো না। তুমি হারিয়ে গেলে আমি একা হয়ে যাবো। জানো তো কেউ নেই আমার। তুমি আছো। তুমি হারিয়ে গেলে নিঃসঙ্গ হয়ে যাবো।
দুঃখ পাবে বুঝি খুব?
পাবোই তো, তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই যে।

আচ্ছা নীলা, তুমি রংধনু হবে? প্লিজ রংধনু হও। তুমি রংধনু হলে সাতটি রঙ থেকে সবচে প্রিয় রঙ টি চেয়ে নেবো। রঙ গায়ে মাখবো। তারপর রঙের মেলায় হারিয়ে যাবো।
হবো না কবি।
কেবলআ না?
হুম…..।

তুমি ভোরের শিশির হবে নীলা? শিশিরের স্পর্শননেই না কত বছর হলো। হবে ভোরের শিশির? এবার না করো না নীলা।
শিশির হবো না।
আবারও না? একটি বার অন্তত হ্যাঁ বলো।
পারবো না কবি। কিচ্ছু ভালো লাগে না।

শরির খারাপ বুঝি! নাকি মন খারাপ?
বলবো না। একদিন সব বলবো আজ না। জোর করো না কবি। জোর করলে কিচ্ছু বলবো না।
ওকে।
কবি নতুন কবিতা লিখছো কি? জানোই তো তোমার কবিতার ভীষণ ভক্ত আমি। নতুন কবিতা কবে পাবো?

নতুন কবিতা লেখা হয়নি কয়েকদিন ধরে। নীলা তুমি এখন কি করছো?
ঘরেই আছি।
বের হও ঘর ছেড়ে বাইরে।
কেনো?

বারে এত সুন্দর আকাশ টা দেখবে না? প্লিজ দেখো। দেখো কি চমৎকার নীল আকাশ। এমন সুন্দর নীল আকাশ অনেকদিন দেখি নি। পৃথিবীর সমস্ত নীল বুঝি আজকের আকাশে। বড্ড মিস করবে।
আমার ঘরের জানালা কোলা কবি, আমি দেখতে পাচ্ছি।
চমৎকার তাই না?
হ্যাঁ।

তোমার প্রিয় রঙ কি নীলা? খুব জানতে ইচ্ছে করছে। নীলা বলো তোমার প্রিয় রঙ কি?
বলবো না।
বলো নীলা, না করো না।
বলবো না কবি। চমক থাকুক। তুমি অপেক্ষায় থাকো। মাঝে মাঝে অপেক্ষা করাটা ও ভালো।
না নীলা বলো। সব অপেক্ষা ভালো নয়। আর অপেক্ষায় রেখো না।

শুনতেই চাও কবি? অবাক হবে কিন্তু। বার বার যে নামটি বলছো সেটাই। এবার বলো দেখি কবি। এবার দেখবো কতোটা বুদ্ধি আমার কবির।
তার মানে তোমার প্রিয় রঙ নীল?

চলবে……