শিক্ষা সাহিত্য

তোমাকে নীরা বলে ডাকতে ইট্ছে করছে , সাজ্জাদ বিন লাল

প্রিন্ট করুন

এই নীলা! জানো তোমাকে নীরা বলে ডাকতে ইট্ছে করছে। রাগ করো না আবার। নীরা নামটি কেনো জানি ভীষণ ভালো লাগছে। নীলা, ও নীলা, তোমাকে নীরা নামে ডাকি?
যা খুশি ডাকো।
রাগ করবে নাতো?
না কবি রাগ করবো না। রংধনুর সাতটি রঙের মতোই কবির মনের রঙ। রাগ করবো না। এইবার বলো কি চাও?

স্পর্শ দিবে? তোমার স্পর্শ চাই নীরা। তোমার তুলোর মত নরম শরীরের স্পর্শ চাই। কাজল দিঘীর মতো তোমার চোখ। সেই চোখের পাতায় স্পর্শ করতে চাই। ভোরের সবুজ ঘাসের মতো তোমার চুলগুলো ঢেউ খেলে যায়। তোমার চুলের স্পর্শ চাই।

নাহ্ দিবো না।
নীরা আমি তোমাকে ছুঁতে চাই। তোমাকে ছোঁব নীরা।
পারবে না কবি।
তোমাকে বমন্ত দিয়ে ছোঁব। হৃদয় দিয়ে ছোঁব। অনুভবে তোমাকে ছোঁব। হৃদয়ে ফাগুন হাওয়া বইবে, তুমি তাকিয়ে থাকবে নীল আকাশ পানে, আমি বসন্ত বাতাস হয়ে তোমাকে ছোঁব। তবুও তোমাকে ছুঁতে চাই নীরা।

পারবে না। বসন্তের ঝরা পাতা দের সাথে ঝরে যাবো আমি। কেউ পাবে না আমাকে। কোথাও খুঁজে পাবে না কবি। বসন্ত আসেই ঝরাপাতা দের ঝরিয়ে নিতে। আমিও পাতাদের মতো ঝরে যাবো।

বসন্ত তো সবুজ পাতাও নিয়ে আসে। আমি সবুজ পাতার ঘ্রান নিতে নিতে তোমাকে ছোঁব। তারপর ভালোবাসবো।

না, সম্ভব না কবি। তাহলে বৃষ্টি দিয়ে তোমাকে ছোঁব। ভরা বর্ষায় ছোঁব। জানো বৃষ্টি আমার প্রিয়। রিমঝিম বৃষ্টির শব্দ শুনবো আর তোমাকে সেই বৃষ্টি দিয়ে ছোঁব। চাইলে তোমাকে ছোঁব আর ভিজবো। ভিজে ভিজে ভালোবাসবো।

বাহ! দারুণ বলছো তো। ভিজে ভিজে ভালোবাসবে। কিন্তু সম্ভব না। মেঘের সাথে মেঘ হয়ে ভেসে যাবো অনেক দূরে, আমাকে ছুঁতে পারবে না কবি।

তাইতো মেঘ হতে চাই। মেঘের সাথে অচিন দেশে যেতে চাই, আষাঢ়ের প্রথম দিনে তোমাকে ছোঁব। কদমফুল দিয়ে ছোঁব। তোমার প্রিয় কদমফুল দিয়ে। না করো না নীরা।

খোঁজেই পাবে না আমাকে। ককনো ছুঁতে পারবে না। হারিয়ে গেলে পাবে কেমন করে, আর না পেলে ছুঁবে কেমন করে?

তোমাকে সুখ দিয়ে ছোঁব নীরা। আমার যত সুখ আছে তোমাকে দিয়ে দিবো। না করো না প্লিজ। সুখ দিয়ে ছোয়ে তোমাকে সুখের রানী বানাবো।

তাহলে আমি দুঃখের সাথে মিতালী করবো। মাঝে মাঝে দুঃখ টা ও ভালেো লাগে। বিশ্বাস করো কবি মাঝে মাঝে দুঃখ টা কে ও আপন মনে হয়।

তাহলে দুঃখ দিয়ে ছোব।

তখন আমি সুখের কাছে যাবো। আসলে আমাকে পাবেই না কবি। দেখা দিবো না। কথা বলবো এভাবে প্রতিদিন তবে দেখা করবো না।

কেনো ওমন করো নীরা, শুধু না আর না কেনো? একটি বার হ্যাঁ করো নীরা। সত্যিই তোমাকে ছোঁব, বেশি কিছু কি চেয়েছি? শুধু ছুঁতে চেয়েছি।

পাগল কবি। আমাকে তুমি পাবেই না।

নীরা পাগলামি করো না।

পাগল কবির সাথে পাগলামি তো করতেই হবে।

নীরা, সত্যি করে বলো তো কবে দেখা দিবে? তোমাকে দেখতে চাই। ভালোবাসার দিনে দেখা দাও। তোমাকে ভালোবাসবো। কাসন্তী রঙের শাড়ি পরে আসবে তুমি। কপালে পড়বে বাসন্তী রঙের টিপ। খোঁপায় পরবে গাদা ফুলের মালা। আমি তোমাকে বাসন্তী বলে ডাকবো। তোমার হাত ধরে বলবো, বাসন্তী তোমাকে ছোঁব।

হা হা হা হা……… পাগল কবি।

হাসছো যে?

নীরা থেকে বাসন্তী হয়ে গেলাম। এতদিন ছিলাম নীলা। তারপর নীরা। আর এখন বাসন্তী। আরো কত নামেই না ডাকবে।

তুমি ই নীরা, তুমিই ছোঁয়া, তুমি ই বাসন্তী। তুমি নীলা তুমি ই আবার নীরা। তুমি ই সব কিছু। তুমি সুখ, তুমি দুঃখ। তুমি আমার ছোঁয়া। তোমাকে ছুঁতে চাই। স্পর্শ চাই তোমার।

যদি দেখা না পাও?

ওমন করে বলো না তাহলে দুঃখ পাবো। এমনিতেই কত দুঃখ আমার। আর দুঃখ দিও না। আচ্ছা নীরা সামনেই বসন্ত, দাও দেখা বসন্তে। তারপর বসন্ত দিয়ে তোমাকে ছোঁব।

না কবি না..। ধরা দিবো না।

আচ্ছা নীরা! তুমি আমার জোসনাময়ী হবে?

কোথায় পাও এত সুন্দর সুন্দর কথা? ও হ্যাঁ… তুমি তো কবি। ভুলে যাই তুমি কবি। কবি বলেই তো এত কথা বলতে পারো। বলো কবি কেমন করো জোসনাময়ী হবো। তা কি সম্ভব?

সম্ভব নীরা। জোসনা রাতে দেখা দিবে তুমি। আকাশ ভরা থাকবে নীল জোসনায়। তোমার হাত ধরে স্পর্শ নিব। তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখবো। তারপর তোমাকে জোসনাময়ী বলে ডাকবো।
অসভ্য কবি।
রোমান্টিক কবি বলে ডাকো। তারপর দুজনে তাকাবো নীল জোসনার পানে। রাত বাড়বে, তোমাকে নিয়ে জোসনা দেখবো এবং বলবো তুমি আমার জোসনাময়ী।

জানো কবি, আমার সত্যিকারের নাম কিন্তু জোসনাময়ী।
তাই? রোমান্টিক নাম তো।
বারে জোসনারাতে আমার জন্ম হয়েছে বলেে। তাইতো নানু আমার নাম রেখেছিলেেন জোসনাময়ী। অবশ্য ফেসবুক বন্ধুরা নীলা নামেই জানে। নীলা নামেই তো আমার ফেসবুক এ্যাকাউন্ট।

আচ্ছা নীরা, জোসনায় ভিজবে? এসো ভিজি।
ভেজা যায়! কিভাবে? সত্যিই ভেজা যায় জোসনায়? মিথ্যা বলো না কবি।

ভরা জোসনা রাতে তুমি জোসনা রঙের শাড়ি পরে আসবে। আমি তোমাকে নিয়ে যাবো ধানসিঁড়ি নদীটির পাড়ে। রাত বাড়বে। জোসনা চলে আসবে কাছাকাছি। জোসনা বৃষ্টি হয়ে ঝরবে। আমরা ভিজবো, তোমার সঙ্গে মিথ্যা বলতে পারি নীরা? কখনই পারি না তোমার সঙ্গে মিথ্যা বলতে।

পাগল কবি, জোসনায় বুঝি ভেজা সম্ভব?
মোটেই পাগল কবি নই। তুমি দেখা দাও জোসনা ভরা রাতে, ঠিকই ভিজবো জোসনা ভরা রাতে। জোসনায় ভিজে ভিজে ভালোবাসবো।

আবারো বলছো পাগল কবি।
মোটেই পাগল কবি নই।
কি কবি তাহলে?

বলো রোমান্টিক কবি। বলো তোমার কবি। নীরার কবি আমি। নীরা আমার। আমি নীরার। নীরা তুমি দেখা দাও। কাছাকাছি এসো। ধানসিঁড়ি নদীর পাড়ে দেখা দাও ভরা জোসনারাতে। তারপর জোসনায় ভিজবো এবং ভালোবাসবো। ধানসিঁড়ি নদী আমার খুব প্রিয়।

তাইতো আমারও প্রিয়। ধানসিঁড়ি নদীটিকে নিয়ে কবিতা লিখতে চাই নীরা। এবারো না করবে? এবার কিন্তু না করো না।
করবো না। আসলে তোমার কবিতা তো অসাধারণ। তোমার কবিতার ভীষণ ভক্ত আমি। যতবার পড়ি তোমার কবিতার প্রেমে পড়ে যাই।

চলবে………….


Related Articles

Back to top button
Close