বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাত, আদালতে মামলা
হবিগঞ্জের সংবাদ ডেস্ক , হবিগঞ্জে বিচারাধীন একটি খুনের মামলা ঢাকায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসামীদের সাজা করিয়ে দেয়ার এবং অপর একটি নিষ্পত্তিকৃত খুনের মামলা পুনরুজ্জীবিত করে দেয়ার ভুয়া আশ্বাসে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। গত ৪ জানুয়ারী হবিগঞ্জের কগনিজেন্স-৬ আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নের হাড়িয়া গ্রামের মোঃ আল আমিন। শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসমা বেগম গতকাল বুধবার মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর গন্যে মামলাটি রুজু করে ৩ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে আদেশ প্রদান করেছেন। মামলার আসামীরা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শাহবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা হাসান মিয়ার পুত্র হেলাল মিয়া, বর্তমানে মাধবপুর উপজেলার বুল্লার বাসিন্দা, সিলেট জেলার উসমানী নগর থানার বড় হাজিপুর গ্রামের মৃত কনা মিয়ার পুত্র দেলওয়ার হোসেন বুলবুল, একই এলাকার বাসিন্দা দেলওয়ার হোসেন বুলবুলের পুত্র আজিম ওরফে আবুল বাসার, মাধবপুর উপজেলার বুল্লা গ্রামের বাসিন্দা মৃত মারফত আলীর পুত্র ছিদ্দিক মিয়া ও একই গ্রামের বাসিন্দা হেলাল মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন। মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামীদের সাথে পুর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ঘটনার ১৫/২০ দিন আগে বাদীর বাড়ীতে এসে আসামীরা বাদীকে জানায়, তাদেরকে ১০ লাখ টাকা দিলে বাদীর চাচা মর্তুজ আলী খুনের মামলা (নং-জিআর ১৪৩/২০ইং) (মাধবপুর) ঢাকায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে ওয়ারেন্ট করিয়ে আসামীদের সাজা দেয়া ছাড়াও ইতিপুর্বে নিস্পত্তিকৃত বাদীর পিতা আয়াত আলী খুনের মামলা পুনরুজ্জীবিত করে দিতে পারবে। এ সময় আসামী হেলাল মিয়া, তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ও সিদ্দিক মিয়া জানায়, ২নং আসামী দেলওয়ার হোসেন বুলবুল হাইকোর্টের একজন বিচারপতির আপন ভাই। তিনি সহজেই এ কাজ করিয়ে দিতে পারবেন। এ সময় দেলোয়ার হোসেন বুলবুল ও আজিম ওরফে আবুল বাসারও উপস্থিত ছিল। আসামীদের কথায় বাদী বিশ্বাস করে টাকা দিতে রাজি হন। মামলায় উল্লেখিত ঘটনার তারিখ গত ০২ অক্টোবর রাত ৯ টায় ১ হতে ৪ নম্বর আসামীগণ বাদীর বাড়ীতে এসে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্ট ডিভিশন ঢাকা এর বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট হাইকোর্ট ডিভিশন ঢাকা এর এডভোকেট মোঃ আমিন-নূর-রাজুর ভূয়া সীল ও জাল স্বাক্ষর করা ৫ পৃষ্ঠার একটি আদেশ নামা দেয়। এতে, ‘বাদীর বিচারাবেদন গ্রহণ ও পর্যালোচনা করে উল্লেখিত আসামীগণের বিরুদ্ধে গত ০১/০৯/২০২০ইং তারিখে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি এবং সংশ্লিষ্ট থানাকে গ্রেফতারী পরোয়ানা আশু কার্যকর করার জন্য আদেশ প্রদান করিল’ উল্লেখ রয়েছে। কাগজ হাতে পেয়ে বাদী তার সম্পদ বিক্রি ও মহাজনের নিকট থেকে ঋণ হিসাবে সংগৃহীত ১০ লাখ টাকা আসামী দেলওয়ার হোসেন বুলবুলের হাতে তুলে দেন। টাকা পেয়ে আসামীরা চলে যাওয়ার পরবর্তীতে অনেক খোজ করেও তাদের সন্ধান না পেয়ে বাদী মোঃ আল-আমিন হবিগঞ্জের আদালতে মামলা দায়ের করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি সাবেক পিপি এডভোকেট মোঃ ফজলে আলী জানান, সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র বাদীর সরলতার সুযোগ নিয়ে জাল কাগজপত্র দিয়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাত করায় বাদী এ মামলা দায়ের করেছেন।