গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কেরোসিন চালিত সেচ পাম্প এখন বিলুপ্তির পথে

এম.মুজিবুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার। গ্রাম বাংলার এক সময়ের সেচ মিশিং কেরোসিন চালিত সেচ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। কালের বিবর্তনে, বিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প সেই স্থান দখল করায় সেই সেচ পাম্প বিলুপ্তির পথে। স্থানান্তর যোগ্য বিভিন্ন মাপের সেচ পাম্প নদী নালার ছোট ছোট ডুবা, পুকুর সেচে এখন গ্রাম গঞ্জে দেখা যায়।
নতুন করে আর কেউ এ ধরনের কেরোসিন চালিত সেচ পাম্প কিনতে যায় না। পুরনো সেচ পাম্প কাজে লাগিয়ে পাশ্ববর্তী নদী নালার ছোট ছোট ডুবা, পুকুর, খাল শুকিয়ে মাছ ধরে। হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা বেলেশ্বরী নদীর তীরে কিছু ডোবা রয়েছে। যেগুলোতে বর্ষার সময় স্থানীয়রা গাছের ডাল দিয়ে মাছের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। পানি কমে গেলে কেরোসিন চালিত সেচ পাম্প ব্যবহার করে পানি শুকিয়ে মাছ ধরা হয়। আগের মতো মাছ পাওয়া না গেলেও চেষ্টার কমতি নেই স্থানীয়দের।
স্থানীয় একটি ডুবার সেচ করার সময় জানা যায়, আসন্ন অগ্রহায়ণ ধান কাটার সময় হয়েছে। ধান শ্রমিকদের খাবারের জন্য ডুবা সেঁচে যে মাছ গুলো পাওয়া যাবে তাতে অনেকাংশে খরচের দিক থেকে বেচে যাবে তারা। এক সময় ছিল যখন এরকম ছোট ডুবা সেচে প্রচুর বড় মাছ পাওয়া যেত। বোয়াল, শোল, গজার, দেশীয় জাতীয় কার্প, শিং,মাগুর, কৈ ছিল এসব জলাশয়ের প্রধান মাছ। এগুলোর পরিবর্তে এখন পাওয়া যায় হরেক রকম ছোট মাছ। স্থানীয় একটা ডুবার মালিক বলেন, এই ডুবা থেকে পনের বিশ বছর আগে একশত বোয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়েছি। তবে এখন যা পাই তা নিজেদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। বাজারজাত করার সুযোগ নেই।
কেরোসিন চালিত সেচ পাম্প এখন ঘরের কোনে পড়ে থাকে। বছরের এক দুই বার মেরামত করে কাজে লাগায়। হয়তো আর কিছুদিন পর এই যন্ত্রাংশ আর দেখা যাবে না।