দেশজুড়ে

নবীগঞ্জের পল্লীতে সুলেমান বাহিনীর দফায় দফায় হামলায় যুবক ক্ষতবিক্ষত! এলাকায় আতংক বিরাজ করছে

প্রিন্ট করুন


স্টাফ রিপোর্টার। নবীগঞ্জ থেকে। নবীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের দীঘলবাক ইউনিয়নের মথুরা পুর গ্রামে সুলেমান বাহিনীর হামলায় যুবক ক্ষতবিক্ষত! গ্রামের এক সহজ সরল অসহায় যুবক নজমুদ্দিন আল হাম্মদ নামের ব্যক্তিকে সুলেমান বাহিনীর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করার দায়ে একাধিক বার প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য হামলা করে তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে গুরুতর আহত করে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে রাস্তায় তাকে ফেলে যায় সুলেমান বাহিনীর লোকজন,পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে ৫দিন সেখানে চিকিৎসা শেষে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালত ক-গ -৫ এতে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কারনে
বর্তমানে তিনি ওই বাহিনীর নানা হুমকি ধামকির প্রেক্ষিতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ করেন হামলার শিকার হাম্মদ ও তার পরিবারের লোকজন৷
গ্রামের ও এলাকার মুকুটহীন সম্রাট সুলেমান ও তার লাঠিয়াল বাহিনীর বেপরোয়া তান্ডব লীলায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন নির্যাতন ও হামলার শিকার পরিবারের লোকজন সহ এলাকাবাসী৷ জানাযায়,উপজেলার মথুরা পুর গ্রামের মৃত জয়নাল মিয়ার ছেলে সুলেমান বাহিনীর প্রধান সুলেমান ও চাঁন মিয়া সহ তাদের প্রভাবশালী লাঠিয়াল বাহিনী কর্তৃক একই গ্রামের মৃত আমির উদ্দীনের ছেলে গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি মোঃ রিয়াজ উদ্দীন নামের (৭০) বছর বয়সী এক প্রবীণ মুরব্বিকে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে দিনদুপুরে দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র সহকারে হামলা করে গত ১লা মে বিকেল ৩টায় রক্তাক্ত জখম করে চক্ষু সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে আহত করা হয়৷
পরে রিয়াজ উদ্দীনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে তিনি আইনের আশ্রয় নেন,এঘটনার স্বাক্ষী দেয়ার কারনে ও সুলেমান বাহিনীর সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিবাদ করার
অপরাধে নির্যাতনের শিকার রিয়াজ উদ্দীনের আত্মীয় একই গ্রামের রাজমিস্ত্রী নজমুদ্দিন আল হাম্মদ (২৬) নামের যুবককে ৯মে রাত ৮টার দিকে এলাকার চিহ্নিত দাঙ্গাবাজ সুলেমান বাহিনীর লোকজন এলোপাতারি হামলা করে গুরুতর আহত করলে তিনি সপ্তাহ খানেক নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন৷ এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় দীঘলবাক ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ এওলা মিয়া সহ এলাকার বিশিষ্ট সামাজিক বিচারকেরা বিষয়টি মিমাংসা করে দেন৷ এই ঘটনাটি সামাজিক বিচারে মিমাংসা করে দিলেও এর রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো স্থানীয় সামাজিক বিচারকদের বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে গত ১১ অক্টোবর
সুলেমান বাহিনীর লোকজন হাম্মদ নামের যুবককে স্থানীয় আউশকান্দি হীরাগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথিমধ্যে সন্ধ্যা রাতেই সন্ত্রাসী হামলা করে দা,রামদা দিয়ে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে মারাত্মক আহত করেন ৷ হামলাকারীরা হাম্মদকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যেই এই হামলা করেছিলো বলে জানান হাম্মদ৷ তিনি আরো বলেন তাকে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে তার কাছথেকে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও একটি দামী মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় দূর্বৃত্তরা৷ হামলাকারীরা হাম্মদকে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে একপর্যায়ে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়৷ পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় ভর্তি করলে সেখানে ৫দিন চিকিৎসা শেষে হাম্মদ বাদী হয়ে সুলেমান,চান মিয়া সহ তাদের বাহিনীর ৮জনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত তার মামলাটি আমলে নিয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে এফ,আই আর গন্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন৷ এব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আজিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন অপরাধী যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
এদিকে উক্ত মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিয়ে আসামীরা নির্যাতনের শিকার হাম্মদ ও তার
পরিবারের লোকজনকে নানা ভাবে আবারো হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন অসহায় নির্যাতিত পরিবার৷ এদিকে সুলেমান বাহিনীর একের পর এক হামলা, মামলা ও নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল সহ ভুক্তভোগীরা৷
মামলার বাদী হাম্মদ বলেন, আমাকে তারা যেভাবে হামলা করে কুপিয়েছে, আমি বাঁচবো বলে কোন আশা ছিলনা তবে রাখে আল্লাহ্ মারে কে? তিনি আরো বলেন
সুলেমান বাহিনীর বিরুদ্ধে, খুন খারাবী,সহ নানা ধরনের গুরুতর
অভিযোগ রয়েছে তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে,তাই তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড রোধে তাদের অর্থের জোগানদাতা ও অর্থের উত্স সন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী জানান তিনি৷
এব্যাপারে অভিযুক্ত সুলেমান মিয়ার মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি,তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, তবে অভিযুক্ত চান মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেননা, তবে তার গ্রামের আলোচিত যুবক ফরহাদ হত্যা মামলা সহ একাধিক মামলার আসামী ছিলেন তিনি, এমনকি ফরহাদ হত্যা মামলায় তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ছিলেন,পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে আপিলে তিনি দীর্ঘদিন কারাভোগ শেষে বেকসুর খালাস পেয়েছেন এবং মৃত্যুদন্ড সাজা প্রাপ্ত আসামী তার ভাই সুলতানের সাজা কমিয়ে আপিল বিভাগ তার ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করায় বিগত ২০ বছরধরে জেলেবন্দী রয়েছেন এবং অচীরেই সাজাভোগ শেষে তার ভাই ছাড়া পেয়ে যাবেন৷ তারা হাম্মদ হামলার ঘটনার সাথে জড়িত নয়৷


Related Articles

Back to top button
Close