বৃহস্পতিবার , ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

আসছে দুর্গাপূজা, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্থ বানিয়াচঙ্গের অনয় আচার্য

প্রকাশিত হয়েছে -

সাজ্জাদ বিন লাল, বানিয়াচং থেকে। শরতের সুর্নিমল আকাশে বেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা,শিশির ভেজা শিউলি ফুলের সুবাস আর জলাশয়ের শাপলা। তখনি বাতাসে ভাসতে থাকে দেবী মায়ের আগমনী সুরশুভ শক্ততির সূচনা হয় পিতৃপক্ষের অবসানে বর্ধিত মহিষাসুর।

শরতের আগমন ও বাতাসে কাশফুলের দোল খাওয়া সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা। সামনেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা।

এ উৎসব কে সামনে রেখে বানিয়াচঙ্গের সেনপাড়ার স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, শ্রী শ্রী মৃৎ শিল্পালয়ের মৃতশিল্পী অনয় আচার্য তার পড়াশুনার পাশাপাশি দূর্গা প্রতিমা নির্মান করছেন। কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় আপন মনে তৈরি করছেন দেবী দুর্গার প্রতিমা।

প্রতিমা তৈরি সম্পর্কে জানতে চাইলে অনয় আচার্য বলেন, প্রতি বছর ১৫-১৬ টি প্রতিমা তৈরি করে থাকি কিন্তু এ বছর মহামারী করোনার কারণে স্ব্যাস্থ্যবিধি মেনে ১০ টি প্রতিমার কাজ করেছি। প্রতিমা তৈরি করা পেশা হলেও লাভ বা লোকসানের চিন্তা না করে ভক্তিমনে সকাল থেকে গভীর রাত অব্দি আপন মনে কাজ করে থাকেন।

মাটির প্রতিমার পাশাপাশি সিমেন্ট দিয়ে নিখুঁত ভাবে গাছ, পশু-পাখি, পুতুল সহ হরেক রকমের তৈজসপত্র দেখে মনে হয় এ যেন অনয় আচার্যের হাতের যাদুর ছোঁয়ার কোন এক জীবন্ত ছবি। তার হাতের তৈরি যে কোন জিনিষপত্র যেন হৃদয় কেড়ে নেয়। মৃৎশিল্পের পাশাপাশি কারুশিল্পে অনয় এক ধাপ এগিয়ে।

সামনে দুর্গাপুজা সব আয়োজন শেষে অনয় ব্যস্থ তার রং তুলি নিয়ে তাদের দুর্গা দেবী কে সাজিয়ে বরণ করে নিতে।

দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, একই সাথে সামাজিক উৎসবও। দুর্গোৎসব উপলক্ষে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশী একত্রিত হন এবং অর্চনার পাশাপাশি সকলে আনন্দ-উৎসব উদযাপন করেন। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।

“ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” এ মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশের সকল ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্ম ও উৎসব পালন করেন। যার কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। এখানে স্মরণাতীত কাল থেকে বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষ একসঙ্গে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছে।

দুর্গাপূজা আবহমান বাংলার শাশ্বত সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুর্গাপূজার সাথে মিশে আছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।